স্বামী বিবেকানন্দ ও সনাতন ধর্ম

“জেগে ওঠো, সচেতন হও এবং লক্ষ্যে না পৌঁছা পর্যন্ত থেমো না ” – স্বামী বিবেকানন্দ

ভারতীয় ধর্ম ও আদর্শকে বিশ্বব্যাপীর কাছে তুলে ধরেছিলেন যিনি শুধু ভারতের নয় প্রত্যেক মানবতার গৌরব – তিনি হলেন বীর সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দ।।

উনবিংশ শতাব্দীতে বিবেকানন্দের আবির্ভাব যার আলোকচ্ছটায়  সমগ্র ভারত তথা পৃথিবী আলোকিত। যিনি সারা জীবন ধরে লড়ে গিয়েছেন, জাতিভেদ প্রথা, কুসংস্কার ও ধর্মীয় গোড়ামির বিরুদ্ধে ।  তার শিক্ষা ও লেখা ভারতের ধর্মীয় ও দার্শনিক ভূ প্রাকৃতিতে গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে।

স্বামী বিবেকানন্দ ১৮৬৩ সালে ১২ জানুয়ারি ভারতের কলকাতায় নরেন্দ্রনাথ দত্ত নামে জন্মগ্রহণ করেন। এই মহান ধর্মীয় নেতা একজন দার্শনিক এবং মহান নীতির অধিকারী একজন ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি “রামকৃষ্ণ পরমহংস” – এর প্রধান শিষ্য ছিলেন । তিনি রামকৃষ্ণ মঠ এবং রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন । তিনি ধর্মীয় সম্প্রীতি , সামাজিক কল্যাণ এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞান অর্জনের জন্য তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।

১৮৯৩ সালে বিবেকানন্দ শিকাগো শহরে অনুষ্ঠিত বিশ্বধর্ম মহাসম্মেলনে অংশ নিতে যান , সেখানে তিনি ভারতের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পান এবং তিনি হিন্দু ধর্মকে বিশ্বধর্ম হিসাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করেন। তার শিকাগো বক্তৃতায়  সার্বজনীন শান্তি ও সহনশীলতার  মাধ্যমে হিন্দু ধর্মকে পশ্চিমা বিশ্বের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।  এর ফলে তাকে আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি দেয়।

স্বামী বিবেকানন্দ ও সনাতন ধর্ম

স্বামী বিবেকানন্দ সনাতন ধর্মের একটি রূপরেখা তৈরি করে দিয়েছেন।  তিনি প্রথমবারের মতো দেখিয়েছেন যে সামগ্রিকভাবে হিন্দু ধর্মের কিছু মৌলিক ধারণা রয়েছে যা সমস্ত সম্প্রদায়ের জন্য সাধারণ। তার মতে, হিন্দু ধর্মের তিনটি অপরিহার্য বিষয় হলো ঈশ্বরে বিশ্বাস, শুধু বেদ বেদান্তের চর্চা নয় এবং কর্মের মতবাদ ও স্থানান্তর।

তিনি ছিলেন পশ্চিমের প্রথম সংস্কৃতি দূত , তিনি দেখিয়েছিলে যে বিশ্বসংস্কৃতিতে ভারতের অবদান অপরিহার্য।

তিনি আরো দেখিয়েছিলে যে বিজ্ঞান ও ধর্ম পরস্পর বিরোধী নয় বরং পরস্পরের পরিপূরক।
তিনি একটি পরিচয় দিয়েছেন “আমরা কে” এবং “হিন্দু ধর্ম কি”

তিনি হিন্দু ধর্মের এককীকরণে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন।  ভগিনী নিবেদিতার ভাষায় – বলা যেতে পারে তিনি যখন কথা বলতে শুরু করেছিলেন তখন ছিল “হিন্দুদের ধর্মীয় ধারণা”, কিন্তু তিনি যখন শেষ করলেন তখন “হিন্দু ধর্ম তৈরি হয়েছিল”

স্বামী বিবেকানন্দ ১৯০২ সালে মাত্র 40 বছর বয়সে বেলুড় মাঠে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

স্বামী বিবেকানন্দ বিশ্বজুড়ে  একজন মহান আধ্যাত্মিক মানুষ এবং দার্শনিক ছিলেন। তিনি বিশ্বজুড়ে আধ্যাত্মিকতা , সম্প্রীতি, সর্বজনীন ভ্রাতৃত্ব এবং  বিশ্বব্যাপী শান্তি চেয়েছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দ বাণী , তার শিক্ষা ও দর্শন আজও বিদ্যমান এবং আধুনিক যুগের তরুণদের পথ দেখায়। তার প্রতিষ্ঠিত সংগঠনগুলো তার শিক্ষা ও দর্শনকে ছড়িয়ে দিচ্ছে এবং সমাজ ও জাতির উন্নতির জন্য কাজ করছে । তিনি সারা বিশ্বের তরুণদের জন্যে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন।

এই মহান বীর সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দের অবতরণ দিবস ১২ জানুয়ারি দিনটিকে প্রতিবছর জাতীয় যুব দিবস পালিত হয়।

আশা করি আজকের এই আর্টিকেল থেকে স্বামী বিবেকানন্দ জীবনী বা স্বামী বিবেকানন্দের রচনা , স্বামী বিবেকানন্দ উক্তি ইত্যাদি বিষয়ক সম্পর্কে জানতে পারলেন।

স্বামী বিবেকানন্দের সংক্ষিপ্ত জীবনী রচনা নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলটি কেমন লাগলো অবশ্যই নিচে থাকা কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত জানাতে পারেন ধন্যবাদ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url