২০২৫ সালে কিভাবে ব্লগিং শুরু করবো | How to start blogging in bengali

কিভাবে ব্লগিং শুরু করব – আপনি যদি অনলাইনে ঘরে বসে কিভাবে আয় করা যায় এটি জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। অনলাইনে আয় করার বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে। তার মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় উপায় হলো ব্লগিং এবং ইউটিউব।

Contents hide

ব্লগিং কিভাবে শুরু করব। ব্লগিং থেকে কিভাবে আয় করা যায় এই সমস্ত প্রক্রিয়া টি একটু দীর্ঘ এবং সময়ের সাপেক্ষ। তারপরও খুব অল্প সময়ের মধ্যে আপনাদের কে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করব ব্লগিং কি (blog ki)ব্লগ তৈরির নিয়মব্লগ থেকে কি ধরনের আয় হয় ইত্যাদি  বিষয়।
চলুন তাহলে জেনে নেই ব্লগ কিভাবে তৈরি করে এবং ফ্রি ব্লগ থেকে আয় কিভাবে করব।

ব্লগিং কি

সহজ ভাষায় ব্লগিং বলতে বোঝায়, এটি এক ধরনের ওয়েবসাইট যেখানে একজন ব্যক্তি বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট প্রকাশ করে যেমন বিভিন্ন ধরনের লেখালেখি ফটো ভিডিও ইত্যাদি।
আগেকার দিনে মূলত কোন নিউজ বা কোন ঘটনা লেখার জন্য ডায়েরি ব্যবহার করা হতো, কিন্তু বর্তমানে সেই লেখাগুলো যদি ওয়েবসাইটে লেখা হয় তখন তাকে ব্লগিং বলে।
এটি এমন এক ধরনের ওয়েবসাইট যেখানে মানুষ তার কাঙ্খিত তথ্য খুঁজে পেতে পারে। যেমন ধরুন আপনি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ছেন নিশ্চয়ই কোন কিছু লিখে সার্চ করেছেন দিয়ে আমার এই আর্টিকেলটা পেয়েছেন এটাই হচ্ছে ব্লগিং।

ব্লগিং শুরু করতে কি কি লাগে

Blog শুরু করতে কি কি লাগে অর্থাৎ ব্লগের মূল চালিকাশক্তি কি কি চলুন জেনে নিন। একটি ব্লগ তৈরি করতে এবং সেখান থেকে কিভাবে আয় যায় এর জন্য নিম্নলিখিত জিনিসগুলো থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

• মোবাইল, ল্যাপটপ বা কম্পিউটার
ইন্টারনেট সংযোগ
ডোমেইন নেম
হোস্টিং (এটি না থাকলে হবে)
• আপনার দক্ষতা ও ধৈর্য শক্তি।

ব্লগিং কি কিভাবে ব্লগিং শুরু করবো বা শিখবো সম্পূর্ণ গাইডলাইন ২০২৫

বর্তমানে ব্লগিং এ কিন্তু অনেক কম্পিটিশন বেড়ে গেছে। আপনি যদি এখন ব্লগ সাইট তৈরি করতে চাইছেন তাহলে আপনাকে প্রচুর রিসার্চ করতে হবে এবং এটি সম্পর্কে আপনাকে অনেক জানতে হবে। অর্থাৎ আপনাকে পরিকল্পনা করে এ ফিল্ডে নামতে হবে তা না হলে সাকসেস পাওয়া খুবই কঠিন হবে।
ব্লগিং শুরু করার আগে যে বিষয়গুলো আপনাকে জানতে হবে সেগুলো নিম্ন আলচনা করা হলো।

১. বিষয় নির্বাচন করুন (niche selection)

ব্লগিং করে আয় করার জন্য আপনাকে প্রথমে সঠিক নিচ সিলেকশন করতে হবে। আপনার যে বিষয়টির উপর আগ্রহ সে বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি করতে হবে। আপনার ওয়েবসাইট এ বিভিন্ন niche নিয়ে কখনো লেখালেখি করবেন না, multi niche নিয়ে কাজ করলে রাঙ্ক পেতে সময় লাগে, এছাড়া আপনার ওয়েবসাইটের ব্র্যান্ডিং হয় না।

ব্লগিং ওয়েবসাইট তৈরি করার আগে niche সিলেকশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে নিচ আপনি নির্বাচন করেছেন সেই নিস নিয়েই লেখালেখি করবেন ।

অনেকেই এই ভুলটি করে থাকে, একটি নিস নিয়ে লেখালেখি করছে, অল্প কিছু লিখে আর লিখতে পারেন না কারণ সেটি সম্পর্কে তার পর্যাপ্ত জ্ঞান নয়। এর ফলে অন্য আরেকটি নিস নিয়ে লেখার চেষ্টা করে , ফলে তারা সাকসেস হয় না সুতরাং এই ভুলটি করা কখনোই চলবে না।
বর্তমানে হেলথ টপিক, অনলাইন আর্নিং, ইন্টারনেট, বিজনেস, ট্রাভেল এইসব নিস নিয়ে আপনি কাজ করতে পারেন, এগুলোর সার্চ ভলিউম ভালো আছে এবং CPC ও ভালো পাওয়া যায়।

২. একটি ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করুন

Blogging ওয়েবসাইট কোথায় তৈরি করতে চান সেটা আপনাকে সিলেট করতে হবে। Blog তৈরি করার জন্য অনেক প্ল্যাটফর্ম রয়েছে । নীচের কোন প্লাটফর্ম থেকে ব্লগ তৈরি করা যায় এবং কোনটা আপনার জন্য বেস্ট হবে সেটি জানতে হবে।

বর্তমানে সব থেকে জনপ্রিয় দুটি ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম হল

• blogger.com
• wordpress

আপনার বাজেট অনুযায়ী দুটোর মধ্যে যে কোনো একটি প্ল্যাটফর্মে ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন। ব্লগ ওয়েবসাইট কিভাবে তৈরি করবেন এই নিয়ে আমাদের অ্যাপটি আর্টিকেল আছে , এটি পড়ে নিতে পারেন।

আপনি যদি ফ্রিতে ব্লগিং ওয়েবসাইট বানাতে চান তাহলে আপনাকে blogger.com থেকে বানাতে হবে। এখান থেকে সাইট তৈরি করলে কোন টাকা পয়সা লাগবে না। ব্লগার থেকে সাইড তৈরি করে অনেকেই প্রচুর টাকা ইনকাম করছে সুতরাং আপনিও ফ্রিতে তৈরি করতে পারবেন।  তবে ডোমেইন কিনে সাইট তৈরি করবেন তাহলে ওয়েবসাইট টা ব্র্যান্ডিং হবে।

আর wordpress থেকে web-siteবানালে কিছু টাকা ইনভেস্ট করতে হবে , যেমন আপনাকে একটি হোস্টিং কিনতে হবে , কিন্তু এখান থেকে সাইট তৈরি করলে অনেক সুবিধা রয়েছে, এবং সাইটের যে কোন প্রবলেম হলে খুব সহজেই সলভ করতে পারবেন।

সুতরাং আপনারা যে কোন একটি ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম সিলেক্ট করবেন তারপর সেখান থেকে blogging website তৈরি করতে পারবেন।

৩. সঠিক ডোমেইন নাম সিলেক্ট করুন

আপনার ব্লগ ওয়েবসাইট এর জন্য সঠিক ডোমেন নাম নির্বাচন করতে হবে। আপনার ওয়েবসাইটের নাম যেটি দিতে চান ঠিক সেই রকম একটি ডোমেইন নাম আপনাকে নিতে হবে, আপনি ফ্রিতে সাব ডোমেইন নেম সিলেট করতে পারেন।

কিন্তু প্রফেশনাল ভাবে ভাবে তৈরি আপনাকে একটি কাস্টম ডোমেন নিতে হবে। সুতরাং ডোমেন কেনার সময় অবশ্যই সঠিক ডোমেন আপনারা নিবেন।

এবার প্রশ্ন হলো কোথায় ডোমেইন কিনতে পাওয়া যায় বা ডোমেইন কিভাবে কিনতে হয়

Domain আপনি অনেক জায়গা থেকে কিনতে পারেন, Domain কেনার জন্য কিছু জনপ্রিয় প্লাটফর্ম হলে GoDaddy, Namecheap, Bluehost, Hostinger ইত্যাদী, এখান থেকে কাস্টম ডোমেইন কিনে আপনার সাইট তৈরি করবেন।

ডোমেন কিনার আগে অবশ্যই মাথায় রাখবেন, ডোমেন নামটা যেন ছোট এবং আকর্ষণীয় হয় আকর্ষণীয় অর্থাৎ এটি যেনো খুব সহজে মনে রাখা যায় , Domain name হচ্ছে আপনার ওয়েবসাইটের ঠিকানা, এটা লিখে কিন্তু ভিজিটররা সরাসরি আপনার ওয়েবসাইটের প্রবেশ করবে।

৪. সঠিক থিম নির্বাচন করুন

Blogger এবং wordpress এর জন্য হাজার হাজার ফ্রি থিম রয়েছে, সেখান থেকে যে কোন একটা থিম chose করতে, এছাড়া অল্প কিছু টাকা দিয়ে পেইড থিম ও ইউজ করতে পারেন। তারপরে এই থিমটাকে ভালো করে ডিজাইন করতে হবে।

সঠিক theme selection করার সময় আপনারা অবশ্যই মনে রাখ, চিন্তার জন্য user-friendly এবং ফাস্ট হয়।

৫. ব্লগ ওয়েবসাইট সেটআপ করুন

তারপর আপনাকে blog website ভালোভাবে সেটা করতে হবে। যেমন আপনাকে কোন সাইটের লোগো দিতে হবে, সোশ্যাল মিডিয়া আইকন ব্যবহার করতে হবে, About Us, Contact Us, Privacy policy ইত্যাদি পেজ অ্যাড করতে হবে। আর যদি wordpress এ website তৈরি করা হয় তাহলে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় plugin ইনস্টল করতে হবে।

৬. ব্লগ টি Google search console এ submit করুন

এরপর আপনার ওয়েবসাইটটিকে Google search console সাবমিট করতে হবে, অর্থাৎ সেখানে আপনাকে sitemap অ্যাড করতে হবে। তাহলে কিন্তু google খুব সহজে বুঝতে পারবে যে আপনি একটি blog website খুলেছেন।

এই গুগল সার্চ কনসোলে web-site এড করার পর আপনার সাইটের আর্টিকেলগুলো পরবর্তীকালে google এ শো করে।

৭. Content publish করুন

এরপর প্রতিনিয়ত আপনাকে কনটেন্ট পাবলিক অর্থাৎ আর্টিকেল লিখতে হবে। আর্টিকেল লিখে দিলেই হবে না, লেখার কতগুলো নিয়ম আছে সেগুলো আপনাকে জানতে হবে, সেটি একটু পর আলোচনা করছি।

তো আপনারা সুন্দর করে article লিখবেন যাতে ভিজিটররা পড়ে যেন কিছু জানতে পারে, এবং লেখা কমপ্লিট হয়ে গেলে পাবলিশ করে দিবেন।

৮. সঠিক SEO করতে হবে

ওয়েবসাইটের আর্টিকেলগুলোকে গুগলের ফাস্ট পেজে আনার জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে SEO (search engine optimization) তো এর জন্য আপনাকে সঠিকভাবে এসইও করতে হবে।

এসইও কিভাবে করবেন চলুন এটি যেনে নিয়ে,

• আপনাকে কিওয়ার্ড রিসার্চ করে আর্টিকেল লিখতে হবে, keyword research জন্য বিভিন্ন ফ্রী টুল রয়েছে সেগুলো ব্যবহার ব্যবহার করতে পারেন যেমন, Google Keyword Planner, Ubersuggest, KeywordTool ইত্যাদি।

• যে বিষয়টি নিয়ে আপনি article লিখবেন, এটি নিয়ে ভিজিটররা কি কি সার্চ করে সেগুলো আপনাকে এসব টুল থেকে খুঁজে বের করতে হবে। তারপর ওই কিওয়ার্ডগুলো আপনার পোস্টে বসাতে হবে।

• ইমেজ ব্যবহার করতে হবে, ইমেজে সাইজটা ৫০ কেবির মধ্যে রাখতে হবে।

• ইমেজ ব্যবহার করতে হবে, ইমেজে সাইজটা ৫০ কেবির মধ্যে রাখতে হবে।

• হেডিং ব্যবহার করতে হবে যেমন, H1, H2, H3 সব হেডিংগুলো ব্যবহার করতে হবে।

• আর্টিকেল রিলেটেড যে বিষয়গুলো লিখে গুগলে সার্চ করে সেগুলো আর্টিকেলের মধ্যে রাখতে হবে। এইভাবে আপনাকে ব্লগ পোস্ট লিখতে হবে।

৯.  নিয়মিত কনটেন্ট লিখুন

ব্লগিং সেক্টরে টিকে থাকার জন্য আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত কনটেন্ট পাবলিশ করতে হবে, সুতরাং আপনাকে consistency টা মেইনটেইন করতে হবে।

এছাড়া কোন আর্টিকেল যদি google এ ফাস্ট পেজে rank করে, কিছুদিন পর এই পোস্টগুলোকে একটু একটু করে আপডেট করতে হবে।

১০. সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার

আপনি যে ব্লক পোস্টগুলো লিখেছেন সেগুলো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া যেমন facebook instagram টেলিগ্রাম ইত্যাদি জায়গায় শেয়ার করতে পারেন। তবে সার্চ করে আপনার সাইটে ভিজিটর আসলে গুগল সেটাকে প্রাধান্য দেয় বেশি।

১১. মনিটাইজেশন

মিনিমাম ৩০ টা আর্টিকেল লেখার পর আপনার ওয়েবসাইটে যদি ট্রাফিক আসা শুরু শুরু হয়ে যায় তাহলে আপনি মনিটাইজেশনের জন্য আপিল করতে পারেন।

এর জন্য Google Adsense এ মনিটাইজেশনের জন্য আপিল করতে হবে। তারপর গুগল ভালোভাবে চেক করবে, আপনি সঠিকভাবে গুগলের নিয়ম-কানুন মেনে আর্টিকেল লিখেছেন কিনা এবং সবকিছু যদি ঠিকঠাক থাকে তাহলে বেশ কিছুদিনের মধ্যেই আপনি মনিটাইজেশন পেয়ে যাবেন। তারপর থেকে খুব সহজে ব্লগিং থেকে আয় করতে পারবেন।

FAQ:

১. ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়

উত্তর: আর্নিং নির্ভর করে ভিজিটরের উপর, ভিজিটর যত বেশি হবে earning তত বাড়বে। তবে অনকে বাংলা ব্লগ থেকে প্রতিমাসে গড়ে $১০০ থেকে $৫০০ পর্যন্ত অনেকেই আয় করে ।

২. নিচের কোন প্লাটফর্ম থেকে ব্লক তৈরি করা যায়

উত্তর: blogger.com, wordpress

৩. ব্লগ থেকে আয় করার জন্য কিসের এপ্রুভাল প্রয়োজন হয়?

উত্তর: গুগল এডসেন্স

৪. ব্লগের মূল চালিকাশক্তি কি

উত্তর: ধর্য, নিয়মিত আর্টিকেল লেখা, SEO ইত্যাদি।

তো বন্ধুরা আশা করি আজকের এই আর্টিকেল থেকে কিভাবে ব্লগিং কিভাবে শুরু করা যায়ব্লগিং কিভাবে শিখবগুগলে ব্লগ লেখার নিয়ম কি ইত্যাদী বিষয় জানতে পারলেন।

এই ওয়েবসাইট টি প্রথম ফ্রী তে blogger.com এ তৈরি করেছিলাম, তারপর সেখান থেকে আমার ইনকাম শুরু হয়, এরপর আমি ওই বাংলা ব্লগ থেকে আয় দিয়ে আমার ওয়েবসাইটটিকে ওয়ার্ডপ্রেসে আমার সাইটটাকে কনভার্ট করি। আপনারা চাইলে এইভাবে প্রথমে ফ্রি ব্লগার এ খুলতে পারেন তারপর সেখান থেকে আর্নিং হলে ওয়ার্ডপ্রেসে চলে আসতে পারে।

কিভাবে ব্লগিং শুরু করব (blogging kivabe korbo) এই নিয়ে আজকের ব্লক পোস্টে কেমন লাগলো অবশ্যই নিচে থেকে কমেন্ট বক্সে আপনারা মন্তব্য করতে পারেন ধন্যবাদ।

Leave a Comment